জনপ্রিয় সংবাদ
- রাজনীতি
- ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩
মাহাথির মোহাম্মদের দীর্ঘ ও সফল জীবনের রহস্য
- বাংলাদেশ
- ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
নওগাঁয় তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস
- রাজনীতি
- ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩
বিএনপির দলছুট সাত্তারকে জেতাতে সরে দাঁড়াচ্ছেন আ.লীগের তিন নেতা
- বাংলাদেশ
- ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩
মার্কিন তালিম নিয়ে মেয়র দেশে ফিরলে মশক নিধনে নতুন সিদ্ধান্ত
সর্বশেষ ভিডিও
- জীবনযাপন
- ০৭ নভেম্বর, ২০২৩
দাঁতে গর্ত হলে রুট ক্যানেল নাকি ফিলিং
দাঁতের নানাবিধ সমস্যার মধ্যে গর্ত হওয়া একটি। এমনটি হলে সঠিক চিকিৎসা জরুরি হয়ে পড়ে। নতুবা দাত নষ্ট হয়ে যায়।
দাঁতের গর্তে কখন রুট ক্যানেল করাবেন আর কখন ফিলিং করা লাগবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টরডা. মো. মোশাররফ হোসেন খন্দকার।
দাঁতের যে অংশটি আমরা দেখতে পাই, সেটি শরীরের সবচেয়ে শক্ত সাদা বর্ণের এনামেল নামক স্তর দিয়ে আবৃত। এর পরের হলুদভাব স্তরটি ডেন্টিন আর সর্ব ভেতরের স্তরটি দাঁতের প্রাণ বা মজ্জা।
মাড়ির ও চোয়ালের হাড়ের মধ্যকার দাঁতের শিকড়ের বাইরের স্তরটি সিমেন্টাম নামক পদার্থ দ্বারা আবৃত থাকে আর ভেতরের বাকি দুটি স্তর একই।
দাঁতের ক্ষয় যখন প্রথম দুটি স্তরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তখন ফিলিংয়ের মাধ্যমেই দাঁত কে স্বাভাবিক রাখা যায়। এনামেল ক্ষয় হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে দাঁতে তেমন কোনো অস্বাভাবিকতা অনুভব হয় না, ডেন্টিন ছুঁয়ে গেলে দাঁত শিনশিন করতে পারে।
অবহেলা বা উদাসীনতার কারণে দাঁতের গর্তের গভীরতা যখন মধ্যকার মজ্জাতে যায় তখন অনেক ব্যথার সৃষ্টি করে, তখন আক্রান্ত দাঁত রক্ষায় রুট ক্যানেল একটি কার্যকর ও নিরাপদ চিকিৎসা।
চিকিৎসার দাঁতটির ওপর কৃত্রিম মুকুট বা ক্যাপ করে নেওয়া জরুরি।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে শুষ্ক মুখ, রুট এবং করোনাল ক্যারিজ এবং পেরিওডন্টাইটিস দেখা যায়। বয়স্কদের মাড়ি রোগের ক্ষেত্রে মাড়ি গাঢ় লাল বর্ণের হয়ে থাকে। ফোলা ও ব্যাথাযুক্ত মাড়ি থেকে সহজেই রক্তপাত হয়। বয়স্কদের মাড়ি মসৃণ, উজ্জ্বল এবং নাজুক অবস্থায় থাকে।
বয়স্কদের যাদের ডায়াবেটিস থাকে তাদের মাড়ি রোগের দ্রুত অবণতি ঘটে।
- বিশ্বে প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে
- ডায়াবেটিসের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়
- যে কোন ব্যক্তিই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন
- শরীর যখন রক্তের সব চিনিকে (গ্লুকোজ) ভাঙতে ব্যর্থ হয়, তখনই ডায়াবেটিস হয়। এই জটিলতার কারণে মানুষের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হতে পারে
- ডায়াবেটিসের কারণে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে, নষ্ট হয়ে যেতে পারে কিডনি এবং অনেক সময় শরীরের নিম্নাঙ্গ কেটেও ফেলতে হতে পারে।
বদলে যাওয়া লাইফ স্টাইলের কারণে আমাদের জীবনে অন্য জটিলতার পাশাপাশি ব্যাপকহারে ডায়াবেটিস বেড়ে যাচ্ছে। একে আয়ত্বে রাখার জন্য প্রথমেই ভাবতে হবে খাবারের কথা। কারণ পথ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
রক্তে শর্করার মাত্রা সঠিক রাখার উদ্দেশ্য হলো-
- দেহের স্বাভাবিক বিপাক ক্রিয়া বজায় রাখা
- দেহের ওজন স্বাভাবিক রাখা
- ডায়াবেটিসের জটিলতাগুলো প্রতিরোধ করা
- কর্মক্ষম থাকা, প্রজনন ক্ষমতা ঠিক রাখা, সামাজিক জীবন বাধাগ্রস্ত না হওয়া ইত্যাদি।
নিয়ন্ত্রিত খাবারের মধ্যে প্রথমেই আসে মিষ্টি খাবার। যেমন- চিনি, গুড়, মধু, গ্লুকোজ না খাওয়া। এ ছাড়া আমিষ বা প্রোটিন এবং চর্বি বা ফ্যাট স্বাভাবিক মাত্রায় গ্রহণ করা। সকালের নাস্তার সময় থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রতি তিন থেকে সারে তিন ঘণ্টা পরপর খাবার খেতে হবে। ওষুধ ও খাবারের মধ্যে একটা সমন্বয় থাকতে হবে।
শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়া
ধীরে ধীরে শোষিত হয় এমন শর্করা হলো জটিল বা পলিস্যাকারাইড। ভুসিযুক্ত আটার রুটি, লাল চাল, ভুট্টার খই, খেজুর আশযুক্ত শাকসবজি ও ফল হলো জটিল শর্করা। যদি কারও খাবারে শর্করা বাড়ানোর প্রয়োজন হয় তাহলে এ ধরনের শর্করা দিয়ে বাড়ানো যেতে পারে। এতে ডায়াবেটিস তেমন বাড়বে না। এদিকে দ্রুত শোষিত হয় এমন শর্করা হলো আঁশবিহীন মিষ্টি ফল, দুধ, আতপ চাল, ময়দা। এগুলো সঙ্গে বা ডাইসকারাইড। এ ধরনের শর্করা সব সময় সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। আবার প্রতিটি শর্করাযুক্ত খাবার সমানভাবে রক্ত শর্করা বাড়ায় না। খাবারের ঘনত্ব ও সময়ের ওপর রক্ত শর্করা বাড়তে পারে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের আমিষযুক্ত খাবারে কোনো বাধা নেই। বড়দের ক্ষেত্রে দৈনিক ১-০.৮ গ্রাম আমিষ প্রয়োজন প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য। উচ্চ আমিষ বা হাইপ্রোটিন প্রয়োজন শিশু, কম ওজন, অপুষ্টি, গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মাতা, পোড়া রোগীদের জন্য। আমিষ রক্ত শর্করাকে খুব ধীরে ধীরে বাড়ায়। পুরো ক্যালরির ১২-২০ শতাংশ আমিষ থেকে আসা উচিত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
এটা প্রমাণিত যে, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার হৃদরোগসহ অন্য অনেক রোগের উৎপত্তি ঘটায়। ডায়াবেটিসের সঙ্গেও এর সম্পর্ক রয়েছে। যদি অন্ত্রে চর্বি বেশি জমা হয়, তাহলে শর্করা শোষণ কম হয়। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ে। চর্বি দুই রকম। সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত চর্বি। সম্পৃক্ত চর্বি হলো ঘি, মাখন, মাংসের চর্বি, ক্রিম, দুধের সর ইত্যাদি। অসম্পৃক্ত চর্বি হলো উদ্ভিজ তেল ও মাছের তেল।
জলপাই ও বাদাম তেল মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। এগুলো খুব সামান্যই রক্তের চর্বি বাড়ায়। সয়াবিন, শস্য ও সূর্যমুখীর তেল হলো পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। এগুলো প্রাজমা কলস্টেরল কমায়। মাছের চর্বি হলো Docashexenoic acid বা DHA। একে উপকারী চর্বি বলে। আমেরিকার হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে দৈনিক খাবারে ১০ শতাংশ-এর বেশি চর্বি না থাকাই ভালো। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীদের বেশিরভাগ মৃত্যুর কারণ করোনারি হার্ট ডিজিজ। সেহেতু সম্পৃক্ত চর্বির ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত।
খাদ্যের আঁশ দেরিতে হজম হয় বলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সহায়ক। এ জন্য দৈনিক ২০-৩০ গ্রাম আঁশ খাবারে থাকা উচিত। আঁশযুক্ত খাবার হলো খোসাসহ ফল, বেসন, ডাল, পেকটিন (যা ফলের খোসায় থাকে), গুয়ার গাম (সিমের নির্যাস), ভুসিযুক্ত আটা, লাল চাল ইত্যাদি।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স দেখে খাবার খেলে সুফল পাওয়া যায়। যেসব খাবার দ্রুত পরিপাক ও শোষণ হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, সেগুলোই উচ্চ জি.আই সম্পন্ন খাবার। যেমন-সাদা রুটি, চিনি, মধু, ফলের রস, আতপচাল, পান্থা ইত্যাদি। এগুলো খেলে ইনসুলিনের প্রয়োজন বেশি হয়। অন্যদিকে নিু জিআই সম্পন্ন খাবারে ইনসুলিনের পরিমাণ কম লাগে। কারণ এগুলো ধীরে ধীরে শোষিত হয়ে রক্ত শর্করা বাড়ায়। যেমন-লাল মোটা চাল, ভুসিযুক্ত আটা, সবজি, ডাল ও আস্ত ফল।
এদিকে প্রোটিন ও ফ্যাট নিু জিআইয়ের মধ্যেই থাকে। ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পর একটি নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকা মেপে চলতে হবে এবং রোগটি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কখনো অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিক খাবার খেতে না পারলে তরল খাবার যেমন স্যুপ, সাগু বার্লি, দুধ ইত্যাদি খেতে হবে। কোনোক্রমেই উপোস থাকা যাবে না। বলা হয়, ঘড় ঋববফরহম ঘড় ঋধংঃরহম এই নীতি মানতে হবে।
প্রতিদিনের খাবার থেকে কতটুকু ক্যালরি আসবে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালরি গ্রহণ যত বেশি হবে, ইনসুলিন বা ওষুধের পরিমাণ তত বেশি হবে। এ জন্য দেহের ওজন আদর্শ মাপে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে খাবার হতে হবে সুষম ও চাহিদা অনুযায়ী।
লেখক : চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.), বারডেম। সভাপতি, ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ও অ্যাডভান্স হাসপাতাল, ঢাকা।