যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে জঙ্গী গোষ্ঠীগুলো যাতে চীনের অস্থিতিশীলতা প্রবণ এলাকা ঢুকে না পড়ে সে জন্য আফগান ভূখ-ের অভ্যন্তরে প্রত্যন্ত পার্বত্য এলাকায় সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের লক্ষ্যে কাবুল ও বেজিং আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। চীন সীমান্ত ঘেঁষা প্রস্তাবিত এই সামরিক ঘাঁটিটি আফগানিস্তানের ওরাখান করিডোরের কাছে নির্মিত হবে বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা এখনই এই করিডোরের দুই পাশে চীন ও আফগান বাহিনীকে যৌথভাবে টহল দিতে দেখেছে। এই টহল বিগত কয়েক মাস যাবত চলছে। তবে এ নিয়ে চীন বা আফগান কোন পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। এই এলাকার কিরঘিজ গোত্র প্রধান আব্দুল রশিদ বলেন, গত গ্রীষ্মে আফগান বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে চীনা সৈন্যরা প্রথম এই এলাকায় আসে। চীনা সেনাবাহিনীর গাড়িতে চীনের পতাকা উড়ছিল। চীনাদের আগমনের কয়েকদিন আগেই আফগান সৈন্যরা আমাদের এই মর্মে সতর্ক করেছিল যে, শীঘ্রই চীনা সেনাবাহিনী এই এলাকায় আসবে। তোমরা অতি কৌতূহলী হয়ে তাদের কাছে যাবে না এবং তাদের সঙ্গে কথা বলা ও ফটো তোলা চেষ্টা করো না। আব্দুল রশিদের কথার সত্যতা পাওয়া যায় অপর এক কিরঘিজ নেতা জো বোই-এর কাছ থেকে। জো বোই বলেন, চীনারা প্রায় এক বছর এই এলাকায় ছিল। তবে ২০১৭ সালের মার্চে তারা চলে যায়। তবে এই দুই উপজাতি গোত্র প্রধানের দেয়া তথ্য চীন ও আফগানিস্তান দু’টি দেশই অস্বীকার করেছে। জো বোই তার বক্তব্যে বলেন, তাদের সীমান্তবর্তী এলাকা আফগান ভূখন্ডের অন্তর্গত হলেও এই এলাকার উন্নয়ন বা বাসিন্দাদের প্রতি আফগানরা কখনই কোন দায়িত্ব পালন করেনি। কিন্তু চীনারা এখানে প্রচুর খাদ্য সামগ্রী ও গরম কাপড় নিয়ে এসেছিল। তারা খুব ভাল মানুষ এবং দয়ালু। প্রতি মাসেই তারা এখানে এসে আমাদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করে। প্রকৃতপক্ষে আফগান সীমান্ত অঞ্চলে খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ বস্ত্র বিতরণ করে চীন স্থানীয় বাসিন্দাদের সহানুভূতি ও সমর্থন পেতে চায়। কারণ চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিংজিয়ান অঞ্চলের বাসিন্দা উইঘুর মুসলমানদের ওপর চীনা প্রশাসনের নিপীড়নের দরুন সেখানের বিক্ষুব্ধ অধিবাসীরা নানাভাবে দেশত্যাগ করার চেষ্টা করছে এবং অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ছে। তাই চীনের উইঘুর মুসলমানরা যাতে আফগানিস্তানের কিরঘিজ মুসলমানদের সাহায্য সহযোগিতা না পায় অথবা এই অঞ্চল দিয়ে যাতে মুসলিম চরমপন্থীরা চীনে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য চীনারা নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়া আফগানিস্তানের এই করিডোরের মাধ্যমে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতকি ও ভূ রাজনৈতিক স্বার্থও বাস্তবায়িত হওয়ার পথ উন্মুক্ত হবে। এ নিয়ে গত ডিসেম্বরে বেজিং-এ আফগান ও চীনা কর্মকর্তারা এক বিস্তারিত আলোচনা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। তবে আলোচনার বিষয়বস্তু বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়নি। বেজিং-এ অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের সত্যতা আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র মোহাম্মদ রাদমানেশ স্বীকার করেছেন। সম্প্রতি তিনি বার্তাসংস্থাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, আমরা চীনের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে ওরাখান করিডোরে একটি ঘাঁটি নির্মাণ করতে যাচ্ছি। চীন আমাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্য করবে এবং আমাদের সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। এ সম্পর্কে কাবুলে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের একজন কূটনীতিক বলেন, বেজিং কেবল আফগান সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
Post Top Ad
Responsive Ads Here

Tags
# আন্তর্জাতিক
Share This

About News Desk
আন্তর্জাতিক
Labels:
আন্তর্জাতিক
Post Bottom Ad
Responsive Ads Here
Author Details
Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.