সেই আদিম কাল থেকেই মানুষেরা কিছু খাবার রান্না করে খেতে শুরু করে। যাতে সেগুলো আরো বেশি সুস্বাদু হয় বা সহজে হজম করা যায়। যেমন, মাংস। তবে, আদিমকালের মতোই আজও আমরা কিছু খাবার নিয়মিতভাবেই কাঁচা খাই। এই খাবারগুলোকে আমরা রান্নাও করি না, ভাজিও না, আগুনে সেঁকও দেই না বা সেদ্ধও করি না। কিন্তু কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো রান্না, ভাজা, সেঁকা বা সেদ্ধ করা ছাড়া খেলে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৯টি খাদ্য সম্পর্কে যেগুলো কখনোই কাঁচা খাওয়া উচিত নয়। ১. আলু আমাদের অনেকেই শসা এবং টমেটোর মতো অনেক সবজিই কাঁচা খাই। তাই না? আলুও তেমনই একটি সবজি যেটি কাঁচা খাওয়া হয়। বেশ কিছু সংখ্যক তরকারি এবং স্ন্যাকস তৈরিতে ব্যবহৃত হওয়া জনপ্রিয় একটি সবজি আলু। কিন্তু আলু কাঁচা খেলে পেটে গ্যাস সৃষ্টি, হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা, মাথা ব্যথা এবং বমির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা আলুতে আছে সোলানিন নামের একটি ট্রক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ। সেদ্ধ, সেঁকা বা রান্না করে খাওয়াই আলু খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায়। ২. শিম শিম কাঁচা খেলে বমিভাব, বমি, হজম প্রক্রিয়ায় গণ্ডগোল এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ এতে এমন একটি এনজাইম আছে যেটি এসব সমস্যা তৈরি করে। আর রান্না করার আগে শীম পানিতে কিছুটা সময় ভিজিয়ে রাখতে হবে। এর মাধ্যমে তা খাওয়া আরো নিরাপদ হয়ে উঠবে। ৩. মধু আমরা আজকাল দোকান থেকে যেসব মধু কিনি সেসবের বেশিরভাগই পাস্তরিত। সুতরাং তা কাঁচা খাওয়াতে কোনো বিপদ নেই। তবে যারা নানা ধরনের অর্গ্যানিক বা প্রাকৃতিক মধু খান তাদেরকে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। কেননা অর্গ্যানিক মধু পাস্তুরিত করা হয়নি। ফলে তাতে কোনো বিষাক্ত পদার্থ থেকে যেতে পারে। অপাস্তুরিত মধুতে গ্রায়ানোটক্সিন নামের এনজাইম আছে যেটি খাদ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বা ঝিমুনির মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। ৪. দুধ দোকান থেকে কেনা পাস্তুরিত দুধ সেদ্ধ না করেও খাওয়া যেতে পারে। তবে অনেকে গরুর দেহ থেকে সরাসরি সংগৃহীত দুধও সেদ্ধ না করেই খেয়ে ফেলতে চান। যা একদমই নিরাপদ নয়। সদ্য গরু থেকে সংগৃহীত কাঁচা দুধে থাক ই কোলাই, স্যালমোনেলা এর মতো জীবাণু। যা মানুষের দেহে মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে এবং স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে। ৫. ব্রোকোলি বেশিরভাগ স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ তাদের সালাদের সঙ্গে বা খাবারে কাঁচা ব্রোকোলি যোগ করতে চান। তাই না? ব্রোকোলি এমন একটি সবজি যাতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান আছে। এবং এর স্বাস্থ্যগত উপকারীতাও অনেক। তথাপি ব্রোকোলিতে আছে এমন কিছু সুগার যা সহজে হজম করা যায় না। এবং হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। রান্না করে খেলে ব্রোকোলির এই সুগার সহজেই হজম করা যায়। ৬. জলপাই সবুজ হোক আর কালো বেশিরভাগ মানুষই জলপাই পছন্দ করেন। কিন্তু কাঁচা জলপাই খেলে তা মারাত্মক কোনো বিপদও ডেকে আনতে পারে। কারণ এতে আছে অলিউরোপেইন (oleuropein) নামের একটি উপাদান যা খাদ্যে তীব্র বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। ৭. মাশরুম ছত্রাকজাতীয় উদ্ভিদ হওয়ায় মাশরুমে এমন সব ক্ষতিকর জীবাণু থাকাতে পারে যেগুলো হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে এবং খাদ্যে মারাত্মক বিষক্রিয়া করতে পারে। সুতরাং মাশরুম কাঁচা না খাওয়াই ভালো। ৮. মাংস এমন অনেকে আছেন যারা সালাদে এবং অন্য কোনো ঠাণ্ডা খাবারে কাঁচা মাংস যোগ করে খান। কিন্তু এই অভ্যাস মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর। কেননা কাঁচা মাংসে থাকে ফিতা কৃমির জীবাণু। এই পরজীবি প্রাণিটি মানুষের দেহে বাসা বেঁধে মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যা সৃষ্টি করার পাশাপাশি মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। ৯. ডিম এমন অনেকে আছেন যারা কাঁচা ডিম খান বা ডিমের কাঁচা কুসুম কোনো খাবারে বিশেষ ফ্লেভার যুক্ত করার জন্য মেশান। কিন্তু এটিও স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ ডিমের কাঁচা কুসুমে আছে স্যালমোনেলা এবং এমন অন্যান্য জীবাণু। যা থেকে হতে পারে নানা মারাত্মক রোগ।
Post Top Ad
Responsive Ads Here

Tags
# স্বাস্থ্য
Share This

About News Desk
স্বাস্থ্য
Labels:
স্বাস্থ্য
Post Bottom Ad
Responsive Ads Here
Author Details
Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.